বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ২৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৬০ পয়সা হিসেবে)। এই ঋণ দেওয়া হবে ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল ইমার্জেন্সি রিকভারি প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স (বি-স্ট্রং)’ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো গত বছরের আগস্টে দেশে সংঘটিত ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো যেমন সড়ক, বাঁধ মেরামত এবং দুর্গত জনগণের সহায়তা ও পুনর্বাসন। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে এই ঋণচুক্তি সই হয়। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সই করেন ঢাকাস্থ কার্যালয়ের অ্যাক্টিং কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি পাঁচটি পৃথক কম্পোনেন্টে বিভক্ত, যা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতায় সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)। এই ঋণ বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে নেওয়া হবে। এতে ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৩০ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক ০.৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং ১.২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। অনুত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক সর্বোচ্চ ০.৫০ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি নির্ধারিত থাকলেও বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরসহ দীর্ঘদিন ধরে এ ফি মওকুফ করে আসছে।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক হচ্ছে সবচেয়ে বড় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে। বর্তমানে ৪৭টি চলমান প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ১৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করছে, যার আওতায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাত, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, অবকাঠামো, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।