২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা লিভ টু আপিলের পরবর্তী শুনানির দিন আগামী মঙ্গলবার (২৭ মে) নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ অনুপস্থিত থাকায় এদিন শুনানি সম্ভব হয়নি। পরে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেন। এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান ২৪ জন। এ ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করে বিচার শুরু করে।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অধিকতর তদন্তে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। এছাড়াও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার পাশাপাশি অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের দেড় মাসের মধ্যেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে আসে। এরপর ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স এবং আপিল শুনানি শুরু হয়।
পরবর্তীতে ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠিত হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চে শুনানি চলে। দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে, যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল করে।