যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অধীনে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওজিই) বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন প্রযুক্তি ও মহাকাশ খাতের উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। তিনি জানিয়েছেন, তার দায়িত্বকাল শেষ হয়েছে।
টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও মাস্ক এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকারি অপচয় কমানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানাই।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে ডিওজিই মিশন সরকারের দৈনন্দিন নীতির অংশ হয়ে উঠবে। এই ঘোষণা দেওয়ার একদিন আগে মাস্ক প্রথমবারের মতো ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমালোচনা করেন। প্রেসিডেন্টের নতুন ব্যয়বহুল বিল প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “একটি বিল হয়তো বড় হতে পারে, আকর্ষণীয় হতে পারে; কিন্তু উভয় গুণ একত্রে পাওয়া কঠিন। এটি আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি।”
২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পের অন্যতম শীর্ষ দাতা ছিলেন ইলন মাস্ক। নির্বাচনের সময় তিনি একাধিক অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের পাশে ছিলেন। নির্বাচনের পর ট্রাম্পও মাস্ককে ‘একজন নতুন তারকা’ বলে আখ্যায়িত করেন। ডিওজিই গঠনের সময় মাস্ক ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি এমন 'সুপার হাই আইকিউ' মানুষ খুঁজছেন, যারা সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন এবং সরকারি ব্যয় কমাতে আগ্রহী। এই বিভাগের অধীনে একাধিক সরকারি দপ্তর বন্ধ হয়ে যায় এবং বিপুল সংখ্যক সরকারি কর্মী ছাঁটাই হন। তবে, মাস্ক একাধিক জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিরোধেও জড়ান। এপ্রিলের শেষ দিকে মাস্ক নিজেই স্বীকার করেন, ডিওজিই এখন অনেকের চোখে ‘বলির পাঠা’য় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “এই বিভাগের মাধ্যমে সব লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি।”
এদিকে, ডিওজিই প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। আদালতের নির্দেশে তাকে এসব মামলায় হাজিরা দিতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, অনুমোদন ছাড়াই ডিওজিই মার্কিন নাগরিকদের আর্থিক ও ব্যক্তিগত তথ্যভাণ্ডারে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও মাস্কের মনোযোগ ছড়িয়ে পড়েছে। টেসলা ডিলারশিপে অগ্নিকাণ্ড, শেয়ারের দরপতন, এবং স্পেসএক্সের ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। সর্বশেষ একটি স্টারশিপ উৎক্ষেপণ ভারত মহাসাগরের উপরে বিস্ফোরিত হয়। এদিকে, তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ সম্প্রতি দুই ঘণ্টার জন্য অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ নিয়ে মাস্ক মন্তব্য করেন, “এই সপ্তাহে এক্সের ধারাবাহিক বিভ্রাট প্রমাণ করে, বড় ধরনের কার্যকর পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে।”