রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রায় ঘোষণার পর ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।রবিবার (১ জুন) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে নিজস্ব ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে রায় প্রসঙ্গে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। স্ট্যাটাসে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ! হাইকোর্ট যে অন্যায় রায় দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছিল, আজ তা প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বাতিল করে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “মহান রবের দরবারে মাথা নত করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি—আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। পরবর্তী কার্যক্রম এখন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমরা মহান রবের সহায়তা কামনা করি, যাতে খুব দ্রুত আমাদের পূর্ণ রাজনৈতিক অধিকার পুনরায় অর্জন করতে পারি। আমিন।”
এর আগে, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন যে নিবন্ধন দিয়েছিল, তা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে একটি রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ জন। এই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। একইসঙ্গে, ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেন আদালত, যার পরিপ্রেক্ষিতে একই বছর নিয়মিত লিভ টু আপিল দায়ের করে জামায়াত।
২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে।
২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা জামায়াতের আপিল ও লিভ টু আপিল ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। সেদিন আপিলকারীর পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিল বিভাগ ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ আদেশ দেন। পরে সময়ের সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে জামায়াত আবেদন পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন জানায়। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর আপিল বিভাগ আবেদন গ্রহণ করে। পরবর্তীতে মামলাটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ৩ ডিসেম্বর থেকে ধারাবাহিকভাবে কয়েকদিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে ১ জুন রায়ের দিন নির্ধারিত হয় এবং নির্ধারিত তারিখেই রায় প্রদান করা হয়।