নতুন চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে যে ধরনের নিশ্চয়তা প্রত্যাশা করছে ইরান — তা আরও স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি।
সোমবার তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনাকে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই পরিষ্কারভাবে জানাতে হবে— কী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং কোন পদ্ধতিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার ‘বাস্তব অবসান’ নিশ্চিত করতে হবে, এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনো যথাযথ স্পষ্টতা দেয়নি। বাঘায়ি আরও জানান, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে তেহরান।
এই বক্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে তারা একটি ‘গ্রহণযোগ্য’ প্রস্তাব দিয়েছে। তবে ইরান সেই প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বলেছে, এটি এখনো পর্যালোচনার অধীন। জাতিসংঘের এক ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০ শতাংশে উন্নীত করেছে। যদিও এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের নিচে, তবুও এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্র ৪ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি।
বাঘায়ি জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে বলেন, এটি পক্ষপাতদুষ্ট এবং কিছু পশ্চিমা দেশের চাপে তৈরি। তিনি বলেন, এই প্রতিবেদন ইরানের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করে। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক মার্কিন প্রস্তাবে ইরানকে সব ধরনের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ইরানের মতে, ওই প্রস্তাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে পরিষ্কার কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়, তেহরান মার্কিন প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় একটি ‘নেতিবাচক’ বিবৃতি প্রস্তুত করছে, যা প্রত্যাখ্যান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অজ্ঞাতনামা এক ইরানি কূটনীতিক বলেন, প্রস্তাবটি ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ কারণ এতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থানে নমনীয়তা দেখায়নি এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যাও দেয়নি। বাঘায়ি শেষত কথায় বলেন, ‘কোনো একটি লিখিত প্রস্তাব পাওয়া মানেই সেটি গ্রহণ করা নয়— এমনকি তা গ্রহণযোগ্য বলেও ধরে নেওয়া যায় না।’