গণতন্ত্র ও দেশের মালিকানা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি। সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার আর কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। আমীর খসরু জানান, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথে অটুট থাকবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও ত্যাগের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, গত দুই দশক ধরে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, এমনকি নতুন প্রজন্মও ভোট দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণ প্রয়োজন—এটিই আন্দোলনের মূল দাবি। বিচার ও সংস্কার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগেই অগ্রগতি চায় কি না—এই প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, সংস্কারের বিষয়টি একটি সমঝোতার ওপর নির্ভর করে। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতারা আগেই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা বিচার বিভাগের ওপর নির্ভরশীল। বিচার বিভাগই বিচার করবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনবে। কারা বিচারের আওতায় আসবে, তা নির্ধারণে এখনো প্রায় ছয় মাস সময় রয়েছে। যাঁরা এর মধ্যে বিচারের মুখোমুখি হবেন না, তাঁদের বিষয়টি ভবিষ্যতের সরকারের ওপর বর্তাবে।
তিনি বলেন, আগামী সরকারের আমলেও অনেককে বিচারের আওতায় আনতে হতে পারে। তাই এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া—এবং এর সঠিক রূপায়ন করবে স্বাধীন বিচার বিভাগ। তাঁর মতে, বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। জামায়াত ও এনসিপির অভিযোগ—সরকার একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করছে—এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে মতামতের বহুমাত্রিকতা থাকে। প্রত্যেকে তাঁর মতামত দিতে পারেন। সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমাদের সেই পরিবেশে অগ্রসর হতে হবে। বিএনপি এতদিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারির দিকে যাচ্ছে—এই প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু বলেন, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যথেষ্ট সময় রয়েছে এবং এমন দীর্ঘ সময় নেওয়ার কোনো প্রয়োজনও নেই। বিএনপি আগেই ডিসেম্বরের মধ্যেই সমস্যাগুলোর সমাধান করে নির্বাচনের আয়োজনের কথা বলেছে। তবে যদি নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেও হয়, তাহলেও বিএনপির আপত্তি নেই।