মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সম্ভাব্য সামরিক হামলার পরিকল্পনায় নীতিগত সম্মতি দিয়েছেন, যদিও এখনো পর্যন্ত তিনি চূড়ান্ত নির্দেশ জারি করেননি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের জানিয়েছেন—ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি রুখতে শেষ পর্যন্ত সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণে তিনি সম্মতি দিয়েছেন। তবে তিনি কিছু সময় নিতে চান, এটা দেখতে যে তেহরান শেষ মুহূর্তে কোনো সমঝোতায় আসে কিনা। যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হামলার লক্ষ্যে থাকা স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইরানের ফোর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। এটি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত এবং সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ধ্বংস করতে শুধুমাত্র সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা ব্যবহার করাই কার্যকর হবে।
ট্রাম্পকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা, তখন তিনি বলেন, “আমি করতে পারি, আবার না-ও করতে পারি।” পাশাপাশি তিনি ইরানের প্রতি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আগামী সপ্তাহটি খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, এমনকি তারও আগে কিছু ঘটতে পারে।” ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইতোমধ্যে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে, ইরান আত্মসমর্পণ করবে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি সামরিক হস্তক্ষেপ করে, তবে তাদের এর চরম মূল্য দিতে হবে।” অন্যদিকে, সাম্প্রতিক দিনে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন করা হয়েছে তৃতীয় একটি নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার। আরব সাগরের দিকে রওনা হয়েছে দ্বিতীয় একটি এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ। যদিও পেন্টাগন বলেছে, এসব মোতায়েন প্রতিরক্ষামূলক, কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক প্রস্তুতির চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের আরও ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলের সঙ্গে মিলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে, তাহলে এসব সেনা মোতায়েন তাদের কৌশলগতভাবে বাড়তি সুবিধা দেবে। পাশাপাশি তেহরানের ওপর চাপ বাড়াবে, যাতে তারা সমঝোতায় রাজি হয় বা আত্মসমর্পণ করে। উল্লেখযোগ্য যে, ইসরাইল-ইরান চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানে মৃতের সংখ্যা ৪৫০ ছাড়িয়েছে, অন্যদিকে ইরানে চালানো পাল্টা হামলায় ইসরাইলে প্রাণহানি হয়েছে অন্তত ২৪ জনের।