ইরানে মার্কিন হামলার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডানপন্থি রাজনৈতিক জোটে স্পষ্ট বিভক্তির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এ হামলা ঘিরে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একটি অংশের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কেউ কেউ এই পদক্ষেপকে সমর্থন করছেন, তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন—এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি ও অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে। — খবর আলজাজিরার। তবে গত শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েল সরাসরি ইরানে হামলা চালানোর পর থেকেই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ কিছু রাজনৈতিক মিত্র প্রকাশ্যে নিজেদের অসন্তোষ জানাতে শুরু করেন। তাদের মতে, ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে আর কোনো নতুন যুদ্ধে জড়াবেন না। কিন্তু এই পদক্ষেপ সেই প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ বিপরীত।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়েও মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে একাধিক আক্রমণাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার প্রশাসনের সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত পদক্ষেপ ছিল ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা। সে সময় তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। আমেরিকান কনজারভেটিভ ম্যাগাজিনের পরিচালক কার্ট মিলস আলজাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “২০২৫ সালের জুন মাস যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক হিসেবে চিহ্নিত থাকবে, বিশেষ করে ডানপন্থি রাজনীতির প্রেক্ষাপটে। দীর্ঘদিনের সেই ‘বিশেষ সম্পর্ক’ এখন ভাঙনের পথে।”
তিনি আরও বলেন, “টাকার কার্লসন, স্টিভ ব্যানন, ম্যাট গেটজ, মারজোরি টেলর গ্রিন এবং জশ হোলির মতো ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (MAGA) নেতৃত্ব এই যুদ্ধের তীব্র বিরোধিতা করছেন।” কার্ট মিলসের ভাষ্য, “এই নেতারা যেসব কথা বলছেন তা আমেরিকান জনগণ সহজে ভুলবে না।” এই অভ্যন্তরীণ বিভাজন ট্রাম্পের জন্য এখন একটি নতুন রাজনৈতিক সংকট তৈরি করছে। নির্বাচনী বছরে নিজ দলেই ভাঙনের এমন আলামত তার প্রচারণা কৌশলে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।