ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবকে গ্রেফতার করেছে। রোববার (২২ জুন) রাত প্রায় ১০টায় রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার মনিপুরী পাড়ার একটি আবাসিক ভবন থেকে তাকে আটক করা হয়। এই গ্রেফতার অভিযানটি একটি সুগঠিত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে ফয়সাল বিপ্লবের অবস্থান ও কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের পর নেওয়া হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ অনুসন্ধান এবং নজরদারির পর সফলভাবে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেফতারির সময় তাকে সম্পূর্ণ নিরাপদে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।’
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় দায়েরকৃত পাঁচটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা অন্তর্ভুক্ত। এই মামলাগুলোর জন্য তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর ছিল। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে ফয়সাল বিপ্লব নিজেকে জনসাধারণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে আড়াল করতে আত্মগোপনে ছিলেন। তার অবস্থান সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধোঁয়াশা থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে গ্রেফতার করতে অনেক সময় লেগেছিল। মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে ফয়সাল বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাকে কোথা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কোন ইউনিট তাকে আটক করেছে সে সম্পর্কে এখনো সম্পূর্ণ তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। আমরা এই বিষয়ে দ্রুত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছি।’
এই গ্রেফতারের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জে বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে, তারা দেশের আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে এবং যারা আইনের ঊর্ধ্বে থাকার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফয়সাল বিপ্লবের বিরুদ্ধে মামলাগুলো সম্পৃক্ত অপরাধগুলি সমাজে যে ধরণের অবাধ ও অবৈধ কার্যকলাপ সৃষ্টি করেছে, সেগুলোর জন্য যথাযথ বিচার নিশ্চিত করাই বর্তমান আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান লক্ষ্য। গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি প্রশংসা প্রকাশ করেছে এবং আশা করেছে, ফয়সাল বিপ্লবসহ সকল আসামিকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে, যাতে জনগণের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস আরও বাড়ে।