মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে বাস্তবিক কোনো যুদ্ধবিরতি হয়েছে কি না—তা নিয়ে চলছে বিভ্রান্তি। ট্রাম্পের বক্তব্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও তার সমালোচনা তীব্র হয়ে উঠেছে। সাবেক মার্কিন কূটনীতিক নেড প্রাইস এ বিষয়ে ট্রাম্পকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তিনি জানান, ট্রাম্প ঘোষিত এ সমঝোতা কোনো স্থায়ী বা বিশ্বাসযোগ্য সমাধান নয়। (সূত্র: আলজাজিরা) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে নেড প্রাইস বলেন, এই যুদ্ধবিরতিকে সফল বলা যেত যদি তা ইরানকে স্থায়ীভাবে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হতো। ২০১৮ সালে ট্রাম্প যে পরমাণু চুক্তি বাতিল করেছিলেন, সেটিই ছিল মূলত একটি কার্যকর সমাধান।
তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের আমলে ইরান ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর মধ্যে যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, সেটি ইরানকে নিয়ন্ত্রণে রাখার একটি কৌশলী ও টেকসই পথ ছিল। ট্রাম্প সেটি বাতিল করে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছেন। নেড প্রাইস মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এখন উচিত এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন একটি স্থায়ী কূটনৈতিক চুক্তির পথে এগিয়ে যাওয়া। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে ইরান দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে এগোতে পারে। এতে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।”
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরান ও ইসরায়েল আগামী ৬ ঘণ্টার জন্য ১২ ঘণ্টার একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি জানান, এই সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ আচরণ করবে এবং এটি ভবিষ্যতে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমঝোতার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। তিনি শান্তি কামনা করেন ইরান, ইসরায়েল, পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্ববাসীর জন্য। তবে ট্রাম্পের এ দাবিকে ইরান নাকচ করে দিয়েছে। তারা বলেছে, কোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তারা পায়নি এবং তেমন কোনো প্রস্তাবের প্রয়োজনও তাদের নেই। ইসরায়েলও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকালেই ইরান ইসরায়েলের দিকে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ শুরু করেছে। শেষ খবর অনুযায়ী, একটি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিনজন।