“জীবনে কখনো এতটা অসহায় বোধ করিনি”—আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সরকারের দায়িত্বে আসার পর থেকেই নিজের চারপাশে এক ধরনের চাপ ও প্রতিকূলতা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েছি, অনেক সময় মত প্রকাশের জন্য ঝুঁকি নিয়েছি। কিন্তু এখনকার মতো কখনো নিজেকে এতটা অসহায় মনে হয়নি। কারণ সরকারে আসার পর থেকে আমাকে কেন্দ্র করে যেভাবে মিথ্যাচার চলছে, অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, তার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানোর সুযোগ পাচ্ছি না।” বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডের সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমার কাছে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অন্যায় তদবির আসে। অনেকেই আশা করে, আমি তাদের পক্ষে নৈতিকতা ও আইনের বাইরে গিয়ে সাহায্য করব। কিন্তু আমি যখন এসব তদবির উপেক্ষা করি, তখনই শুরু হয় কুৎসা রটানো, গালাগালি। আমাকে ভারতের দালাল বানিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হয়। এমনকি আমার অতীত কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে আমাকে জনগণের চোখে বিতর্কিত করে তোলার অপচেষ্টা চলছে।” তিনি আরও বলেন, “সরকারের অংশ হওয়ার মানে যেন এখন আর দায়িত্ব পালন নয়, বরং একধরনের বন্দিত্ব। আমি যেমন করে কথা বলতাম, মত প্রকাশ করতাম—তা এখন আর পারছি না। মনে হয় আমি নিজের অবস্থান থেকেও কথা বলতে পারি না। চারদিকে শুধু অভিযোগ, অপবাদ আর ভুল ব্যাখ্যার শিকার হচ্ছি। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নেই।” আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, যা আমার ব্যক্তিত্ব, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং নীতিনিষ্ঠতার চরম পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। অথচ আমি শুধু দেশের আইন ও জনগণের পক্ষে থাকতে চেয়েছি। কিন্তু সে চেষ্টাকেও ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।” সেমিনারে অন্যান্য বক্তারাও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর আইনি কাঠামোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।