মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ: প্রধান আসামি ফজর আলী গ্রেপ্তার। কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি ফজর আলী (৩৮)-কে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান। ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে শুক্রবার (২৭ জুন) মুরাদনগর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। ঘটনার সময় তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। অভিযুক্ত ফজর আলী কৌশলে ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে আটক করে মারধর করে এবং ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে, উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে। পরদিন রাতে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীকে বিবস্ত্র করে ১০–১২ জন যুবক মারধর করছে। ওই নারী প্রাণভিক্ষা চাইলেও কেউ তাকে রক্ষা করেনি। পুলিশ জানায়, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ এই ঘটনা সম্পর্কে তাদের জানায়নি। তবে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের হওয়ার পরই অভিযান শুরু করে পুলিশ এবং ভিডিওতে দেখা যাওয়া অন্যদেরও শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ধর্ষক ফজর আলী বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে। ভুক্তভোগীর স্বামী দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফজর আলীর সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিচয় ছিল কিছু অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে।
এদিকে স্থানীয়দের কেউ কেউ ধর্ষককে বিএনপি কর্মী হিসেবে দাবি করলেও, বিএনপির নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল কিছু ছবিতে অভিযুক্তকে আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে, যা নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশের দুটি দল অভিযানে নামে। তিনি আরও জানান, ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো একটি অপরাধ এবং এ বিষয়ে উৎস শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।