ভোক্তা অধিকার রক্ষা কেবল একটি প্রশাসনিক কাজ নয় - এটি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব, জনসেবার বহিঃপ্রকাশ এবং নাগরিক সুরক্ষার একটি মৌলিক স্তম্ভ। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আজ সফলতার সঙ্গে পালন করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (DNCRP)। আর এই প্রতিষ্ঠানের গতিশীল নেতৃত্বে আছেন এক সৎ, সাহসী ও জনমুখী কর্মকর্তা-মোহাম্মদ আলিম আখতার খান। তাঁর নেতৃত্বে DNCRP আজ জনগণের আস্থা অর্জনকারী একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। পাঁচটি মূল অধিকার রক্ষায় DNCRP। ২০০৯ সালের "ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন"- এর আওতায় DNCRP যে পাঁচটি অধিকার রক্ষায় কাজ করছে:
১. নিরাপদ পণ্য ও সেবার অধিকার
২. সঠিক তথ্য জানার অধিকার
৩. বাজারে পছন্দের স্বাধীনতা
৪. প্রতিকার ও অভিযোগ জানানোর অধিকার
৫. ক্ষতিপূরণের অধিকার
এই পাঁচ স্তম্ভের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষকে প্রতারণা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সচেতন, সাহসী ও স্বাভাবিকভাবে প্রতিরোধক্ষম করে তুলছে। অর্জনের ভাষায় নেতৃত্বের সার্থকতা। ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত DNCRP-এর পরিসংখ্যান: ১,৬৩,০০০+ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, ১১৩ কোটি+ টাকা আদায়, ৮,৪৮৮ ভোক্তাকে সরাসরি ক্ষতিপূরণ (প্রায় ১.৫ কোটি টাকা), ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে: ৫,৩৭৪টি অভিযান, ১১,৬৮৫টি প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি, ৬.৭৬ কোটি টাকা জরিমানা আদায়, সর্বমোট অভিযানের সংখ্যা: ৭০,৮০০+ অভিযান, ১,৬৬,২৯০+ প্রতিষ্ঠানে নজরদারি। এই সংখ্যাগুলো শুধু প্রশাসনিক সাফল্যের নয়, বরং একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।
প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক DNCRP। মোহাম্মদ আলিম আখতার খানের উদ্যোগে চালু হয়েছে: হটলাইন ১৬১২১ - সরাসরি অভিযোগ জানাতে, অনলাইন পোর্টাল: www.dncrp.portal.gov.bd, SCMS Tracking System - অভিযোগের অগ্রগতি জানার প্রযুক্তি, নতুন ডিজিটাল অভিযোগ প্ল্যাটফর্ম ও মোবাইল অ্যাপ (প্রক্রিয়াধীন), জেলা-উপজেলাভিত্তিক নিয়মিত অভিযান টিম, এই উদ্যোগগুলো DNCRP-কে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাছে একটি বিশ্বস্ত আশ্রয়স্থলে পরিণত করেছে। নেতৃত্বের মাপকাঠিতে মানবিকতা: মোহাম্মদ আলিম আখতার খান এমন একজন কর্মকর্তা, যিনি অফিসে বসেই নীতিনির্ধারণ করেন না-তিনি মাঠে নামেন, ভোক্তার ফোন রিসিভ করেন, সশরীরে অভিযান চালান, এবং প্রয়োজনে আদালতে দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দেন। তার নেতৃত্বদর্শন:
“শুধু আইন প্রয়োগ নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই হলো আমাদের সাফল্য।” এই দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে একজন জনমুখী প্রশাসক ও ন্যায়বোধসম্পন্ন নেতা করে তুলেছে। চ্যালেঞ্জের জায়গা এবং করণীয়:
■ জনবল সংকট: মাত্র ২০০+ কর্মকর্তার মাধ্যমে ৬৪ জেলার দায়িত্ব পালন কঠিন। দ্রুত জনবল নিয়োগ প্রয়োজন।
■ আইনি সীমাবদ্ধতা: বিদ্যমান জরিমানার সীমা বহু ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত। আইন সংশোধন অত্যাবশ্যক।
■ ভেজাল ও ই-কমার্স প্রতারণা: বিশেষজ্ঞ টাস্কফোর্স, ল্যাব ইউনিট ও ডিজিটাল যাচাই ব্যবস্থা আরও জোরদার করা জরুরি।
ভোক্তার কণ্ঠে DNCRP: “আগে ঠকতাম, কিছু করার ছিল না। এখন ১৬১২১-এ কল দিলেই ব্যবস্থা হচ্ছে।” -এক ভোক্তা, কুড়িগ্রাম। “আগে দাম-মান নিয়ে কেউ ভাবত না। এখন DNCRP-এর তদারকিতে চট্টগ্রামের বিক্রেতারাও সতর্ক।”- এক ব্যবসায়ী। ভবিষ্যৎ DNCRP: পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা- প্রতিটি উপজেলায় DNCRP অফিস, স্কুল-কলেজে সচেতনতা কর্মসূচি, মোবাইল অ্যাপ ও QR কোড স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে পণ্যের গুণমান যাচাই, জরুরি ভেজাল শনাক্তকরণ ইউনিট, ভোক্তা-সুরক্ষা আইন সংস্কার ও দ্রুত বিচার পদ্ধতির প্রবর্তন। অভিযোগ জানানোর উপায়: হটলাইন- ১৬১২১, ওয়েবসাইট-www.dncrp.portal.gov.bd, সরাসরি- নিকটস্থ জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এখন কেবল একটি সরকারি দপ্তর নয়, এটি একটি ন্যায়নিষ্ঠ, সেবা-নির্ভর রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতীক। আর এই প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছেন মোহাম্মদ আলিম আখতার খান-যিনি কেবল একজন কর্মকর্তা নন, বরং একজন মানবিক নেতৃত্বের ধারক, যিনি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বকে জনগণের পাশে পৌঁছে দিয়েছেন। ভোক্তার অধিকার মানেই রাষ্ট্রের নৈতিকতা। এই চেতনা যাঁরা ধারণ করেন, তাঁদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ।