মুরাদনগরে ধর্ষণ মামলায় অটল ভুক্তভোগী, মূল অভিযুক্তের ভাই পলাতক।
কুমিল্লার মুরাদনগরে বহুল আলোচিত ধর্ষণ মামলায় মামলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার চার যুবকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। বিষয়টি গতকাল নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোর্ট পরিদর্শক সাদেকুর রহমান। মামলার সূত্র, স্থানীয় সূত্র এবং পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামের ফজর আলীর বিরুদ্ধে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। অভিযুক্ত ফজর আলী মাদক ব্যবসা, জুয়া, সুদের কারবার ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ এ ঘটনায় ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে ফজর আলী কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন। ধর্ষণের ঘটনার সময়কার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় একই গ্রামের চার যুবক—অনীক, সুমন, রমজান ও বাবু। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, তার মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই সূত্রে ফজর আলীর সঙ্গে তার কিছু কথা হতো, যা ফজর আলীর ছোট ভাই শাহপরান মেনে নিতে পারেননি। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত ২৬ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগী নারী তার বাবার বাড়িতে ছিলেন। ওই সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাইরে ছিলেন। সেই সুযোগে ফজর আলী ঘরে প্রবেশ করেন। তার প্রবেশের তিন মিনিট পর চার যুবক ঘরে ঢুকে ফজর আলী ও ওই নারীকে আটক করে বেধড়ক মারধর করে এবং পরে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে।
স্থানীয়দের ধারণা, ঘটনার নেপথ্যে নির্দেশদাতা ছিলেন ফজর আলীর ছোট ভাই শাহপরান। তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ২৭ জুন ভুক্তভোগী নারী ফজর আলীকে প্রধান আসামি করে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। পরদিন ২৮ জুন বিবস্ত্র করে মারধরের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। রবিবার ওই নারী জানান, ‘যা হওয়ার হয়েছে। বিচার হলেও ইজ্জত তো আর ফিরে আসবে না।’ প্রথমে তিনি স্বামী ও স্থানীয়দের কথায় মামলা তুলে নেওয়ার কথা ভাবলেও এখন জানিয়েছেন, তিনি মামলা চালিয়ে যাবেন। মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, মারধর এবং ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত শাহপরানকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।