ঢালিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি রূপালি পর্দায় নানা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করে আসছেন। বয়স পঞ্চাশ পেরোলেও এখনও নায়িকা চরিত্রে সাবলীলভাবে পর্দা মাতাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত নতুন সিনেমা ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’। থ্রিলারধর্মী এই ছবিতে তার সহশিল্পী ছিলেন বলিউডের রাহুল বোস এবং পরিচালনায় ছিলেন সায়ন্তন ঘোষাল। সিনেমায় রাহুল বোসের চরিত্র রঞ্জন একজন কার্টুনিস্ট, আর ঋতুপর্ণা অভিনয় করেছেন অনুরেখা সেনগুপ্ত নামের এক বিবাহিত নারীর ভূমিকায়, যিনি রঞ্জনের খুবই কাছের বন্ধু। ছবির কাহিনিতে এক পুরুষ ও বিবাহিত নারীর বন্ধুত্বের নানা স্তর উঠে এসেছে। এ বিষয়টি নিয়েই সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হলে ঋতুপর্ণা বলেন, “সমাজ এখনো নারী ও পুরুষের বন্ধুত্বকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে না।”
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমাদের পেশায় অনেক বেশি পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে কাজ করতে হয়—টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে চিত্রগ্রাহক পর্যন্ত সবাই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক পুরুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। আমার অনেক সম্পাদক বন্ধু আছেন, যারা পুরুষ। কিন্তু বন্ধুত্বের তো কোনো লিঙ্গ থাকে না।” তবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এখনও সেই জায়গায় পৌঁছায়নি বলেই মনে করেন তিনি। তার ভাষায়, “যদি কোনো নারীর একাধিক পুরুষ বন্ধু থাকে, তবে সমাজ তাকে সহজেই চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অথচ কোনো পুরুষের বহু নারী বন্ধু থাকলে, সেটিকে স্বাভাবিক ও সম্মানের চোখেই দেখা হয়। সমাজ এখনো এই বৈষম্য কাটিয়ে উঠতে পারেনি।” ঋতুপর্ণা আরও বলেন, “একজন অভিনেত্রী যদি একাধিক ছবিতে কাজ করেন, তখনও নানা কুৎসিত ধারণা তৈরি হয়—ধরে নেওয়া হয় তিনি নিশ্চয়ই পরিচালক বা প্রযোজকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। অথচ, নারী-পুরুষের বন্ধুত্ব মানেই সেখানে কোনো শারীরিক সম্পর্ক থাকবে—এমন ভাবনা একেবারেই ভুল।” ঋতুপর্ণার এই মন্তব্য আবারও সামনে এনেছে সমাজে দীর্ঘদিন ধরে চলা পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তবতা। যেখানে এখনো নারীর সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও স্বাধীনতাকে নানা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানো হয়। অথচ সময় এসেছে এই মানসিকতার আমূল পরিবর্তন ঘটানোর।