বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত ‘আন্তঃজেলা অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা কাবাডি প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচী ২০২৫’-এর বাছাইপর্বে জয়পুরহাট জেলা কাবাডি একাডেমির পাঁচজন কিশোরী খেলোয়াড় নিজেদের অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে জায়গা করে নিয়েছে। সীমান্তবর্তী এই জেলাটির ক্রীড়াক্ষেত্রে এই অর্জন নিঃসন্দেহে একটি গর্বের মাইলফলক।উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো-এই পাঁচজন কিশোরীই পূর্বে উত্তরবঙ্গ কাবাডি সংঘের 'নারী কাবাডি লীগ ২০২৩'-এর খেলোয়াড় ছিলেন, যেখানে তারা প্রথমবারের মতো ঢাকার মাঠে কাবাডি খেলায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকেই অনুশীলনের ধারাবাহিকতায় তারা নিজেদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলে আজ জাতীয় পর্যায়ের বাছাইপর্ব পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন।মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ এখনো নানান সামাজিক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়। পরিবারের অনীহা, সমাজের কটাক্ষ কিংবা নিরাপত্তার প্রশ্ন- এসব কাটিয়ে একজন কিশোরীকে মাঠে আনতে হয় প্রচুর সাহস ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তৃণমূল পর্যায়ের কোচরা, যারা শুধু প্রশিক্ষক নন, বরং অভিভাবক, পথপ্রদর্শক ও শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জয়পুরহাট জেলা কাবাডি একাডেমির সম্মানিত কোচ মোঃ রুহুল আমিন সেই ভূমিকাটি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। স্নেহ, শৃঙ্খলা ও কঠোর পরিশ্রমের মিশেলে তিনি তার খেলোয়াড়দের গড়ে তুলেছেন শুধু মাঠে পারদর্শী ক্রীড়াবিদ হিসেবে নয়, বরং আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়চেতা মানুষ হিসেবেও। খেলোয়াড়দের কাছে তিনি যেমন অভিভাবক, তেমনি একজন প্রেরণাদায়ী বড় ভাইয়ের মতো। তৃণমূল কোচদের অভিজ্ঞতায় উঠে এসেছে- একজন মেয়ে খেলোয়াড়কে মাঠে আনতে হলে তার অভিভাবকদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় যেতে হয়। মায়েদের চোখে চোখ রেখে বলতে হয়, “আপনার মেয়েটা মাঠে যেমন নিরাপদ, তেমনি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের পথে।” এই মানবিক ও আন্তরিক যোগাযোগই অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের খেলার অনুমতি এনে দেয়।
আজ জয়পুরহাটের যে পাঁচজন প্রতিভাবান কিশোরী অন্বেষণ কর্মসূচিতে জায়গা করে নিয়েছে, তারা কেবল নিজেরাই নয়- তাদের পেছনে থাকা কোচ, সংগঠক ও পরিবার সবাইকে গর্বিত করেছে। তারা এই জেলায় নারী ক্রীড়ার এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।সম্মানিত কোচ মোঃ রুহুল আমিন-এর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা। আপনার হাতে গড়া খেলোয়াড়রাই আগামী দিনের জাতীয় কাবাডির মঞ্চে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে- এমনটাই প্রত্যাশা।প্রিয় কিশোরী খেলোয়াড়দের জন্য রইল অফুরন্ত শুভ কামনা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন।তোমাদের সাফল্যই হবে আগামী প্রজন্মের প্রেরণা।