আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক প্যানেলের আম্পায়ার বিসমিল্লাহ জান শিনওয়ারি আর নেই। মাত্র ৪১ বছর বয়সে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পেশোয়ারে ভুঁড়ি কমাতে গিয়ে এক অস্ত্রোপচারের পর সোমবার (৭ জুলাই) ভোরে তার মৃত্যু হয়। শিনওয়ারির ভাই সয়দা জান জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরে পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন বিসমিল্লাহ। চর্বি জমে যাওয়া এবং অস্বস্তির কারণে তিনি পেশোয়ারে গিয়ে পেটের চর্বি অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। অপারেশনের পর তিনি কয়েক দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন (৮ জুলাই) আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের আচিন জেলায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তিনি রেখে গেছেন পাঁচ ছেলে, সাত মেয়ে এবং অসংখ্য ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী।
বিসমিল্লাহ জান শিনওয়ারি ছিলেন আফগানিস্তানের একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ আম্পায়ার। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিনি ৩৪টি ওয়ানডে ও ২৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন। ২০১৭ সালে শারজাহতে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সূচনা হয়। সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করেন ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ওমানে অনুষ্ঠিত আইসিসি মেনস ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ লিগ-২-এর ম্যাচগুলোতে। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নয়, ঘরোয়া পর্যায়েও তার ব্যাপক সক্রিয়তা ছিল। তিনি ৩১টি ফার্স্ট ক্লাস, ৫১টি লিস্ট ‘এ’ এবং ৯৬টি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তার এই মৃত্যু আফগান ক্রিকেটের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তারা শোক জানিয়ে বলেন, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন এবং তার পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দেন।আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহও তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, বিসমিল্লাহ জান শিনওয়ারি ক্রিকেটের জন্য অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন। তার পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও ব্যক্তিত্ব সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা থেকে নেয়া একটি সিদ্ধান্ত যে এমন মর্মান্তিক পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে, শিনওয়ারির মৃত্যু তারই এক করুণ উদাহরণ। তিনি হয়তো আরও বহু বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। তার অকাল প্রয়াণে শুধু আফগানিস্তান নয়, পুরো ক্রিকেট বিশ্বই হারাল এক নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা।