টানা ১০৩ দিনের পূর্ণাঙ্গ ইসরায়েলি অবরোধে গাজা উপত্যকা এখন ভয়াবহ মানবিক সংকটে নিপতিত। এই পরিস্থিতিতে গাজার প্রশাসন সতর্ক করে জানিয়েছে, সেখানে ৬ লাখ ৫০ হাজার শিশুসহ বহু মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতে চলেছে, অথচ আন্তর্জাতিক মহল এই পরিস্থিতিতে নীরব ভূমিকা পালন করছে। আল জাজিরার শনিবারের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রশাসনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বর্তমানে গাজায় প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ চরম ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। তারা এই পরিস্থিতিকে আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর সমষ্টিগত অবরোধ বলে বর্ণনা করেছে। খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকটে প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত তিন দিনে শুধু অপুষ্টি ও ওষুধের অভাবে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যা এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি।’ কর্মকর্তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে ৬৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা প্রমাণ করে, চলমান অবরোধের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে শিশুদের ওপর।
এদিকে গাজায় চলমান ‘জাতিগত নিধন’ বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির প্রায় ৬০ জন এমপি। তারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব ফিলিস্তিন অ্যান্ড দ্য মিডল ইস্ট’-এর উদ্যোগে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয়, যা বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির কাছে পৌঁছেছে। চিঠিটিতে লেবার পার্টির কেন্দ্র ও বামপন্থি ধারা মিলিয়ে ৫৯ জন এমপির স্বাক্ষর রয়েছে। চিঠিতে এমপিরা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শহরের ধ্বংসস্তূপে ইসরায়েলের কথিত ত্রাণকেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন এবং বলেন, এটি কার্যত ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা ও তাদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার সামিল।