রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে গিয়ে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। আদালতের কাছে তিনি জানান, তিনি একজন পেশাদার অভিনয়শিল্পী, কখনো রাজনীতিতে জড়াননি এবং রাজনীতি সম্পর্কে কোনো ধারণাও নেই। রোববার (১৩ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন অপু বিশ্বাস। শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।সকাল ১২টা ৪০ মিনিটে তিনি আদালতে উপস্থিত হন এবং পেছনের বেঞ্চে বসেন। ১২টা ৫৭ মিনিটে মামলাটি শুনানির জন্য ডাক পড়লে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়ান। অপু বিশ্বাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মোজাফফর হোসেন জিকু, আবুল বাশার কামরুলসহ আরও কয়েকজন। তারা জানান, ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পেয়েছিলেন অপু, যার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। মামলার এজাহারে তার নাম উল্লেখ নেই এবং বাদী স্বীকারোক্তিমূলক হলফনামাও দিয়েছেন। তাই সহ-আসামিদের জামিনের নজির অনুসরণে তার জামিন প্রার্থনা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুজ্জামান সুমন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, অপু বিশ্বাস আওয়ামী লীগের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছেন এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তাই তার জামিন দেওয়ার সুযোগ নেই। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি শুধুই অভিনয় করেছি, সেটাই আমার পেশা। আমি এখনো অভিনয়শিল্পী, রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম না এবং রাজনীতির কিছু বুঝি না।’ তবে এ সময় আদালতে উপস্থিত কিছু আইনজীবী অপুকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করেন। তিনি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থেকে বলেন, ‘আমার একটি ছোট সন্তান আছে।’ এ কথার প্রতিক্রিয়ায় কিছু আইনজীবী মন্তব্য করেন, ‘আপনি সন্তানের কথা বলে আদালতের সহানুভূতি পেতে চাচ্ছেন।’ দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অপু বিশ্বাসকে জামিন দেন। বেলা ১টা ৫ মিনিটে নারী পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে গাড়িতে তুলে দেন। এর আগে, গত ১০ জুলাই অপু বিশ্বাস আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন জমা দেন। একই মামলায় গত ১৮ মে অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে কারাগারে পাঠানোর দুদিন পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। মামলার এজাহারে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই আন্দোলনকারীরা ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নিলে গুলিতে এনামুল হক নামে একজন আহত হন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় এনামুল হক ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও কয়েক শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলায় অপু বিশ্বাস ২০৮ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত। এছাড়া অভিনেত্রী আসনা হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, জায়েদ খানসহ ১৭ জন শিল্পীকেও আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, এসব শিল্পী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সরকারদলীয় কার্যক্রমে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন।