বলিউডের শীর্ষ অভিনেত্রীদের একজন ক্যাটরিনা কাইফ। আজ তিনি বিশাল সফলতার শিখরে পৌঁছেছেন, তবে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল চরম অনিশ্চয়তা ও কঠোর পরিশ্রমে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে চার লাখ রুপির সামান্য অর্থ ও একজোড়া স্বপ্ন নিয়ে তিনি লন্ডনের সুরক্ষিত পরিবেশ ছেড়ে ভারতের ব্যস্ত মুম্বাই শহরে পাড়ি জমান। সেখানকার শোবিজ দুনিয়ায় তার কোনো পরিচিত ছিল না, শুধু ছিল অটল আত্মবিশ্বাস আর অদম্য সাহস। ২০০৯ সালে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাটরিনা তার সেই সংগ্রামের দিনগুলোকে স্মরণ করেছেন। তিনি বলেন, ইউরোপের জীবনযাত্রার তুলনায় ভারতের পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা হলেও, ভারতে পা রাখতেই তিনি এক অদ্ভুত আত্মিক সংযোগ অনুভব করেছিলেন। তার কথায়, “আমার বেড়ে ওঠার সময় আমি কখনোই নিজের আত্মার সঙ্গে এমন কোনো সম্পর্ক অনুভব করিনি। কিন্তু ভারতে এসে হঠাৎ করে নিজস্ব মানুষদের মাঝে নিজেকে পেয়েছি। আমার এক চাচা তখন বেঙ্গালুরুতে ছিলেন এবং পরিবারও কিছুটা পাশে ছিল।” তবে যখন তার বড় বোন লন্ডনের বাড়িতে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন, ক্যাটরিনা সেখানে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। বড় বোন বলেছিলেন, “ক্যাটরিনা, এটা আমার জন্য নয়, আমি লন্ডনের জীবনটাই ভালোবাসি।” কিন্তু ক্যাটরিনা স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, “আমি এখানেই থাকব, এটাই আমার জায়গা।”
সেই সময় ক্যাটরিনা মডেলিং করতেন এবং একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন, যা ছিল একটি কবরস্থানের পাশে। ভয় কাটাতে তিনি সারারাত জেগে থাকতেন, আর ঘুমাতেন শুধু ভোরের আলো এসে পড়লে। ক্যাটরিনা বলেন, “আমি যখন প্রথম ভারতে এলাম, আমার কাছে মাত্র চার লাখ টাকা ছিল। আমি নিজেকে বলেছিলাম, যদি এই টাকায় দাঁড়াতে পারি, তাহলে থাকব; আর না পারলে ফিরে গিয়ে আবার কলেজে ভর্তি হব। তখন আমি মডেলিং শুরু করেছিলাম, এক এজেন্সি থেকে আরেকটিতে পোর্টফোলিও জমা দিতাম।” ২০০৩ সালে ‘বুম’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন ক্যাটরিনা। এরপর ‘ওয়েলকাম’, ‘পার্টনার’, ‘টাইগার’ সিরিজ, ‘ধুম থ্রি’সহ একের পর এক বড় সুপারহিট সিনেমায় অভিনয় করে বলিউডে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন। ৪২তম জন্মদিনে ক্যাটরিনার এই সংগ্রামময় গল্পগুলো স্মরণ করিয়ে দেয়, সফলতার পেছনে থাকে অসংখ্য নিঃসঙ্গ রাত, আত্মত্যাগ এবং সাহসী সিদ্ধান্তের কাহিনী।