গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আয়োজিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সহিংসতা, প্রাণহানি ও সংঘর্ষের বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বৃহস্পতিবার আইএসপিআরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, গোপালগঞ্জে বর্তমানে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং প্রশাসনের জারি করা কারফিউ এখনও বহাল রয়েছে। এ অবস্থায় নাগরিকদের ধৈর্য ধারণ ও সহনশীলতার সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বুধবার “জুলাই পদযাত্রা” নামে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য এবং কিছু সাংবাদিক আহত হন। পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে গেলে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে শুরুতেই তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সমাবেশ চলাকালীন মঞ্চে ফের হামলা চালানো হয় এবং একই সময়ে জেলা কারাগারেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মাইকিংয়ের মাধ্যমে বারবার হামলাকারীদের শান্ত থাকতে অনুরোধ জানায়, কিন্তু তারা সেনাবাহিনীর দিকেই ককটেল ও ইট-পাটকেল ছুড়ে পাল্টা আক্রমণ চালায়। আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী তখন বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির সমন্বিত অভিযান চালিয়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে এবং গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের নিরাপদে খুলনায় সরিয়ে নেওয়া হয়।’ বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, ‘বর্তমানে গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও প্রশাসনের অন্যান্য সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগণও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শন করেছে এবং সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে। জনসাধারণকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন কোনো ধরনের গুজব বা অপপ্রচারে কান না দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বরাবরই দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’