রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের মধ্যেই ইউক্রেনের সরকারে বড় ধরনের রদবদল এসেছে। দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো। এই পরিবর্তনের ফলে ডেনিশ শ্যামিহালের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ইউলিয়া, যিনি ২০২০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের অনুমোদনের পর সিভিরিদেঙ্কো এই পদে আসীন হন। ৩৯ বছর বয়সি ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো আগে উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চলতি বছর ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ চুক্তিতে তিনিই অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন। এই চুক্তি ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যকার পূর্বের শীতল সম্পর্ক উষ্ণ করতে সহায়ক ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় সিভিরিদেঙ্কো জানিয়েছেন, তিনি দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেবেন।
নতুন প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমাদের সরকার এমন একটি ইউক্রেন গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার ভিত্তি হবে নিজস্ব সামরিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সক্ষমতা। আমার প্রধান লক্ষ্য হলো এমন বাস্তব ও ইতিবাচক পরিবর্তন, যা প্রতিটি ইউক্রেনীয় নাগরিক তাদের প্রতিদিনের জীবনে অনুভব করবেন। যুদ্ধের এই সময়ে দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের বিলম্বের সুযোগ নেই—আমাদের দ্রুত ও কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রী আন্দ্রিয়ি সিবিহা (৫০) তার পদে বহাল থাকছেন। তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বিদায়ী আইনমন্ত্রী ওলহা স্তেফানিশিনাকে (৩৯) যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করেছেন। তার নিয়োগ এখনো ওয়াশিংটনের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে স্তেফানিশিনার, যিনি সাম্প্রতিক খনিজ সম্পদ চুক্তির আলোচনাতেও ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওক্সানা মার্কারোভা বিদায় নিচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন, কারণ তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভকে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিতে চাইছিলেন। তবে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য ইয়ারোস্লাভ ঝেলেজনিয়াক দাবি করেছেন, ওয়াশিংটন তার মনোনয়ন অনুমোদন করেনি। অন্য যেসব পরিবর্তন এসেছে, তার মধ্যে উপমন্ত্রী ওলেক্সি সোবোলেভ অর্থনীতি, পরিবেশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন এবং তারাস কাচকা হচ্ছেন ইউরোপীয় সংযুক্তিকরণবিষয়ক নতুন উপপ্রধানমন্ত্রী।