বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক সর্বস্তরের জনগণকে দেশের শত্রু ও ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলায় সর্বদা সতর্ক ও সচেতন থাকার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র রক্ষায় জনগণকে আরও বেশি সচেতন হয়ে সারা দেশের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে একযোগে এবং দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। জাতির এই মহৎ উদ্দেশ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দেন তিনি।বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আওতাধীন রূপনগর থানা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমিনুল হক। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘আমার দেশ, আমার মাটি, গাছ লাগিয়ে করব খাঁটি’ স্লোগানকে সামনে রেখে পরিবেশ রক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করা। তিনি বলেন, প্রকৃতির প্রতি যত্নবান হয়ে গাছ রোপণ করা শুধু পরিবেশের জন্য নয়, আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ও দেশপ্রেমের প্রতীক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
আমিনুল হক তাঁর বক্তব্যে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা সরকারের অভ্যন্তরেই অবস্থান নিয়ে বিচার বিভাগ, আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের সকল নাগরিক ও রাজনীতিকদের বিশেষভাবে সতর্ক ও সুসংগঠিত থাকতে হবে, যেন দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় থাকে এবং অন্যায় নির্মূল করা যায়। তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে যে সাক্ষাৎ হয়েছিল, সেটি বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এক বিশেষ ধরনের স্বস্তির সঞ্চার করেছিল। তবে দুর্ভাগ্যবশত কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিশেষ করে তথাকথিত ‘আলবাটর বাহিনীর’ কিছু নেতারা সেই স্বস্তি মেনে নিতে পারেননি। তারা এখন “সংস্কার” ও “বিচার” এর নামে নির্বাচন পেছানোর ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্র দেশ ও দেশের মানুষের ক্ষতি ছাড়া কিছুই নয়, এজন্য সবাইকে এগিয়ে এসে তা প্রতিরোধ করতে হবে।
সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, সংস্কার একটি ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া, যা ইতোমধ্যে ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনো তার কোনো স্পষ্ট ফলাফল দেখতে পারিনি। তিনি উল্লেখ করেন, এখনও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার এবং বিলম্ব করার নানা কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে, যা একটি দুর্ভাগ্যজনক ও অগ্রহণযোগ্য বিষয়। দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে দেয়া যাবে না, এই চক্রান্তকে ব্যর্থ করতে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পরিবেশ রক্ষায় এবং রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই দেশের প্রকৃতি ও জনগণের মঙ্গলের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি আমিনুল হক ও অন্যান্য নেতাকর্মীরা রূপনগর থানা এলাকায় নিম গাছের চারা রোপণ করে পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
রূপনগর থানা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল হকের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য আমজাদ হোসেন মোল্লাসহ অসংখ্য নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন এবং জাতির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।আসন্ন নির্বাচন ও দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমিনুল হক আরও বলেন, বর্তমান সরকারের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় জনগণকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় প্রতিটি নাগরিকের ভূমিকা অপরিসীম। তিনি সকলকে আহ্বান জানান, সক্রিয়ভাবে রাজনীতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে। দেশের প্রতিটি মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সকল ষড়যন্ত্র ও অন্যায় মোকাবেলায় সক্ষম করবে। এভাবে জাতির সব শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে সমৃদ্ধি ও শান্তির পথে এগিয়ে নিতে চান আমিনুল হক, যার জন্য তিনি সর্বদা জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।