পাকিস্তানের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যুর আগের ২৪ ঘণ্টায় কী ঘটেছিল—সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো। তারা জানিয়েছেন, মামলার তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং হুমাইরার মোবাইল ফোন ইতিমধ্যে সন্ত্রাস দমন বিভাগের (সিটিডি) কাছে ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সিটিডি’র প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা হুমাইরার ফোনের নিরাপত্তা লক ভেঙে তার ভেতরের ডেটা বিশ্লেষণ করে আরও তথ্য বের করার চেষ্টা করছেন। তদন্তের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর হুমাইরাকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল। ওই দিন দুপুর ১টার দিকে তিনি ক্লিফটন এলাকায় গিয়েছিলেন এবং দুপুর ২টার মধ্যে বাসায় ফিরে আসেন। এরপর থেকে তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। তদন্তকারীরা বলছেন, হুমাইরা সে সময় চরম আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন এবং দীর্ঘদিন কাজ না পেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তার মোবাইল ফোনে পাওয়া চ্যাট ও মেসেজ বিশ্লেষণে জানা গেছে, তিনি পরিচিতজনদের কাছ থেকে কাজ বা চাকরির অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু সাড়া পাননি। এ ছাড়া, তার মৃত্যুর পর দীর্ঘ সময় পার হলেও বাসা থেকে দুর্গন্ধ না ছড়ানোর বিষয়টিও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
জানা গেছে, নভেম্বর মাসে ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসিন্দারা হুমাইরার ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ আসার কথা প্রহরীকে জানান। কিন্তু মালিকপক্ষ বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়নি, কারণ তারা গিয়েও কোনো কিছু টের পাননি। ধারণা করা হচ্ছে, এই দেরির কারণেই দুর্গন্ধের মাত্রা দুর্বল হয়ে পড়ে। তদন্তে আরও উঠে এসেছে, হুমাইরা মৃত্যুর সময় কাপড় ধুচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি বাথরুম থেকে বেরিয়ে হঠাৎ পড়ে যান কিংবা কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে মারা যান। রান্নাঘরে কোনো খাবারের নমুনা না মিললেও, তার ফোনে একটি ফুড ডেলিভারি অ্যাপ পাওয়া গেছে—যা কাজ করছিল না। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা হুমাইরার ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছেন। একে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে দেখছেন তারা, কারণ এটি থেকে তার আর্থিক অবস্থা ও শেষ সময়কার গতিবিধি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।