মালয়েশিয়ায় আবারও শুরু হয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান। দেশটির ইপোহ রাজ্যে এমনই এক অভিযানের সময় চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনা সামনে এসেছে—নিজের বৈধতার ঝুঁকিতে স্বামী ও দুই সন্তানকে রেখে পালিয়ে গেছেন এক নারী। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীর কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল না। এই ঘটনার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অপরদিকে, তার স্বামী ও ছোট দুই সন্তানকে আটক করেছে অভিবাসন বিভাগ। মালয়েশিয়ার শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম হারিয়ান মেট্রো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত শনিবার ভোরবেলায় ইপোহ শহরের পার্সিয়ারান প্যানোরামা লাপাঙ্গান পেরদানার একটি নির্মাণসাইটে যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেয় পেরাক রাজ্যের ইমিগ্রেশন বিভাগ এবং জেনারেল অপারেশনস ফোর্স (পিজিএ)। সেখান থেকে মোট ১২০ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন। পেরাক ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক দাতুক জেমস লি বলেন, “অভিযানের সময় কাগজপত্র যাচাই করার মুহূর্তেই ওই নারী হঠাৎ করেই দৌড়ে পালিয়ে যান। তার স্বামী এবং শিশু সন্তানরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি নির্মাণসাইট ত্যাগ করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন এবং তার কাছে কোনো বৈধ ভ্রমণ নথি ছিল না।”
এদিকে, আটককৃত ১২০ জনের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ (আইন ১৫৫) এবং ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩-এর অধীনে বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। যদিও এখনো জানা যায়নি, আটককৃতদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন। তদন্ত চলছে। দাতুক জেমস লি আরও জানান, “আটককৃতদের সবাইকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি অভ্যন্তরীণ কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে থাকা শিশুদের একটি বিশেষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে, যেখানে তাদের সুরক্ষা ও যত্নের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” এই ঘটনা মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাত্রার এক নির্মম চিত্র তুলে ধরেছে। আইনি কাগজপত্র না থাকলে পরিবারকেও ফেলে পালিয়ে যেতে হচ্ছে অনেক অভিবাসীকে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতেই চলবে কার্যক্রম। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে যাওয়া নারীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মনে করছেন, তার খোঁজ পাওয়া গেলে পুরো পরিবারের অভিবাসন পরিস্থিতি এবং অন্য কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সম্ভাবনা সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে।