রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে আসা নেতাকর্মীদের পদচারণায় ভরে উঠেছে উদ্যান ও আশপাশ। সকাল থেকেই মিছিলের ঢল, দলীয় স্লোগান, আর নানা রঙের জামা-পাঞ্জাবিতে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানী। সমাবেশের মূল মঞ্চে সকাল সাড়ে ৯টায় উপস্থিত হন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও সালাম জানিয়ে বলেন, “এই সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। জাতীয় নেতারা দুপুর ২টা থেকে তাদের বক্তব্য রাখবেন।” তার এই আহ্বানের মধ্য দিয়েই মূল আয়োজনের সূচনা ঘটে। সমাবেশের সাংস্কৃতিক আয়োজনের সূচি অনুযায়ী, তা শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। তবে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগে, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পর্বের আনুষ্ঠানিক শুরু হয়। এই অংশের পরিচালনায় ছিলেন সাইফুল্লাহ মানসুর। পুরো আয়োজনের সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
এবারের সমাবেশ কেন্দ্র করে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে জামায়াতের পক্ষ থেকে। এই দাবিগুলো আদায়ে ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন এসেছেন বাস, ট্রেন ও লঞ্চে চেপে। সমাবেশস্থলের দিকে এগিয়ে আসা প্রতিটি মিছিলে ছিল দলীয় স্লোগান, ব্যানার ও পোস্টারের সমারোহ। নেতাকর্মীদের অনেকেই হাতে ধরে রেখেছেন জামায়াতের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। কেউ কেউ আবার পরেছেন সেই প্রতীক খচিত টি-শার্ট, পাঞ্জাবি ও টুপি। তাদের এই দলীয় সাজ ও ঐক্যবদ্ধ পদচারণায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সংগঠনের শক্তিমত্তা ও সাংগঠনিক প্রস্তুতির পরিপূর্ণতা। শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকাজুড়ে ঘুরে দেখা গেছে-নেতাকর্মীদের ঢল, ঢাক-ঢোল, স্লোগান আর ব্যস্ততার মাঝে ব্যতিক্রমধর্মী এক পরিবেশ। অনেকটা উৎসবমুখর কিন্তু রাজনৈতিক বার্তা সমৃদ্ধ এই আয়োজন ঘিরে রাজধানীতে সৃষ্টি হয়েছে বিশেষ রাজনৈতিক উত্তেজনা। এ সমাবেশ শুধু দলের অভ্যন্তরীণ শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ নয়, বরং সরকারের কাছে সাত দফা দাবির মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।