২০২৬ সালে ‘দ্য বিউটিফুল গেম’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায়। কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী এই বিশাল আয়োজন সরাসরি মাঠে বসে উপভোগ করতে চাইবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই আসরে ৬৫ লাখেরও বেশি দর্শক স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখবেন। ইতোমধ্যে অনলাইনে বিপুল সংখ্যক মানুষ টিকিটের জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাই শুধু একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই টিকিট পাওয়া যাবে-এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। ফিফা জানিয়েছে, টিকিট ছাড়ার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে এবং হালনাগাদ তথ্য পেতে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আগ্রহী ব্যক্তিদের নিবন্ধন করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। সেজন্য প্রথমেই একটি ‘ফিফা আইডি’ তৈরি করতে হবে। এই আইডি ব্যবহার করে টিকিটের জন্য আবেদন ও কেনাকাটা করা যাবে। বিশ্বকাপের টিকিট কয়েকটি ধাপে ছাড়া হবে। প্রথম ধাপে বিক্রি শুরু হবে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে। এই ধাপে যারা আগে থেকে নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্য থেকে এলোমেলোভাবে কিছু ভক্তকে নির্ধারিত সময়ের জন্য টিকিট কেনার সুযোগ দেওয়া হবে। যারা সেই সুযোগ পাবেন, তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের মতো, এবারও প্রথম ধাপের টিকিট বিক্রি হবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শেষ হওয়ার আগেই। ফলে তখন আপনি জানবেন না কোন দল কোন ম্যাচ খেলবে। তবে পরবর্তী ধাপে যখন ড্র সম্পন্ন হয়ে যাবে এবং দলগুলোর গ্রুপ নির্ধারিত হবে, তখন নির্দিষ্ট ম্যাচ বেছে নিয়ে টিকিট কেনা যাবে। যদি লটারির অনিশ্চয়তা এড়াতে চান, তাহলে ফিফা কালেক্টিবলের ‘রাইট টু বাই (RTB)’ নামক ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি নিশ্চিতভাবে টিকিট কেনার সুযোগ পাবেন। আরটিবি পাওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে গ্লোরি প্যাক কেনা, নির্ধারিত ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করা, সারপ্রাইজ প্যাকের মাধ্যমে পাওয়া অথবা মার্কেটপ্লেস থেকে আরটিবি কিনে নেওয়া। গ্লোরি প্যাকের পরিমাণ সীমিত, তাই তা শেষ হলে মার্কেটপ্লেসে তুলনামূলক বেশি দামে কিনতে হতে পারে। চ্যালেঞ্জ ও সারপ্রাইজ প্যাক ব্যবহারের জন্য এনএফটি ও ডিজিটাল মুদ্রা সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে এবং কিছু বাড়তি অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। ২০২৫ সালে ফিফা হসপিটালিটি প্যাকেজ প্রকাশ করবে, যাতে থাকবে ভিআইপি লাউঞ্জ, উচ্চমানের খাবার এবং অন্যান্য প্রিমিয়াম সুযোগ-সুবিধা। এক ম্যাচের জন্য এসব প্যাকেজের দাম শুরু হবে একজনের জন্য ১ হাজার ৩৫০ ডলার থেকে, তবে কোন ম্যাচ, স্টেডিয়াম বা ধাপ অনুযায়ী এই দাম কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাইট, হোটেল এবং যাতায়াতসহ পুরো প্যাকেজ অফার করবে।
ফিফা চায়, টিকিট শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্মেই বিক্রি হোক এবং রিসেল করাও সেখান থেকেই হোক। যদি কেউ ম্যাচে যেতে না পারে, তবে সে ফিফার ওয়েবসাইটেই টিকিট পুনরায় বিক্রি করতে পারবে। অন্য কোনো ওয়েবসাইট বা খেলার দিন স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে টিকিট কেনা বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এতে প্রতারণার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই যারা বিশ্বকাপ খেলা মাঠে বসে দেখতে চান, তাদের এখন থেকেই রেজিস্ট্রেশন করা, ফিফা আইডি তৈরি করা, লটারির প্রস্তুতি নেওয়া কিংবা ডিজিটাল আরটিবি ও হসপিটালিটি প্যাকেজের সুযোগ বিবেচনা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে এই স্বপ্ন পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।