ফেসবুকে উচ্চ আদালত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলীয় সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা আবেদনটি পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেছেন হাইকোর্ট। আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পেলে আদালতের পর্যবেক্ষণের বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী আইনজীবী। রোববার (২০ জুলাই) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনটির শুনানি শেষে “ডিসপোজড অফ” বা নিষ্পত্তি করেছেন। ঘটনার শুরু ২২ মে, যখন হাইকোর্ট বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকার মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করেন। ওই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সারজিস আলম তার ফেসবুকে লেখেন— “মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায়, তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কী?” এই স্ট্যাটাস হাইকোর্টের মর্যাদাহানিকর বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন ২৪ মে সারজিস আলমকে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশে বলা হয়, তাকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে হবে এবং সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। তবে নোটিশ পাওয়ার পরও সারজিস আলম ক্ষমা চাননি।
ফলে আইনজীবী জসিম উদ্দিন ২৮ মে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৭ জুলাই আদেশের জন্য ২০ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন এবং পরে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন জসিম উদ্দিন নিজে এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির উপস্থিত ছিলেন। আদেশের পর জসিম উদ্দিন জানান, আদালত আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন। পূর্ণাঙ্গ আদেশ হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে আদালত কী ধরনের পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। এরপর পরিস্থিতি বুঝে আপিল বিভাগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই ঘটনায় আদালতের মর্যাদা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতপ্রকাশের সীমারেখা এবং আইনি জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। আদেশের বিস্তারিত প্রকাশের পরপরই এই মামলার ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ স্পষ্ট হবে।