উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সংঘটিত ভয়াবহ যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার পর এখনো বহু পরিবার তাদের প্রিয়জনের সন্ধান পাচ্ছেন না। অনেকে নিশ্চিত নন, তাঁদের সন্তান বা স্বজন আহত হয়েছেন, নাকি নিহতদের তালিকায় রয়েছেন। এই অবস্থায় যেসব নিখোঁজ ব্যক্তির নাম এখনো সরকারি বা হাসপাতালসূত্রে প্রকাশিত আহত কিংবা মৃতদের তালিকায় নেই, তাদের পরিবারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের দ্রুত মালিবাগস্থ অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে ডিএনএ নমুনা জমা দিতে হবে। এই নমুনার ভিত্তিতে দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় নিহতদের মরদেহ শনাক্ত করার প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং স্বল্পতম সময়ে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, “এখন পর্যন্ত নিখোঁজদের মধ্যে মাত্র একটি পরিবারের পক্ষ থেকে ডিএনএ নমুনা প্রদান করা হয়েছে। অথচ সিএমএইচ মর্গে রাখা ছয়টি মরদেহ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। যদি নিখোঁজ প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যায়, তাহলে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিএনএ ম্যাচিং করে পরিচয় নিশ্চিত করতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “এই মুহূর্তে সবার সম্মিলিত সহযোগিতা ছাড়া এই মানবিক সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।”
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সিএমএইচ মর্গে থাকা অজ্ঞাত ছয়টি মরদেহ থেকে ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব নমুনা বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে এবং দ্রুত সিআইডি ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়ে বিশ্লেষণ কাজ শুরু হবে। এদিকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, পরিচয় শনাক্ত করতে হলে আত্মীয়-স্বজনদের ডিএনএ নমুনা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই কাজটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হয় এবং এতে সময় যত কম লাগে, স্বজনদের পরিচয় শনাক্ত করা তত দ্রুত সম্ভব হয়। পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলেছে, “আপনারা দ্রুত সিআইডি ভবনে যান এবং নমুনা দিন। এতে আপনাদের স্বজনদের খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।” এই দুর্ঘটনা শুধু রাজধানী নয়, সমগ্র দেশবাসীকে নাড়া দিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রিয়জন হারানো অসংখ্য পরিবার আজও অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন, একটিবার জানার আশায়-তাদের সন্তান, ভাই, বোন বা স্বামী-স্ত্রী এখন কোথায়? ডিএনএ নমুনা প্রদানই হতে পারে তাদের সেই প্রিয়জনকে চিহ্নিত করার একমাত্র উপায়।