২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাতের জামিন আবেদন বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ মামলার রিমান্ড শুনানির জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আবুল বারকাতকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে ১১টা ৭ মিনিটে তাকে আদালতে তোলা হয়, যেখানে তিনি কাঠগড়ায় বসেন এবং অনেকটাই চিন্তিত দেখা যায়। তার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুর ইসলাম।
জামিন আবেদনকারীর পক্ষে শাহিনুর ইসলাম বলেন, ২০১৩ সালে এননটেক্স গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান সুপ্রভা স্পিনিং মিলস ঋণের জন্য আবেদন করেছিল। সেই আবেদন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন মেনে ঋণ মঞ্জুর করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ড. আবুল বারকাত কোনও অবহেলা করেননি এবং তিনি কোনো নীতিমালা লঙ্ঘন করেননি। তিনি আরও জানান, এর আগে একই বিষয়ে দুদক তদন্ত করেছিল এবং কোনো দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়ায় ক্লিয়ারেন্স দিয়েছিল। তাই একই বিষয়ে নতুন করে মামলা করা সম্পূর্ণ দ্বিচারিতা এবং দুদকের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এসব বিবেচনায় আবুল বারকাতের জামিনের দাবি জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার কর্মচারীরা যদি কোনো অপরাধ বা অনিয়ম করে, তার দায়ভার তাকে নিতে হবে। এ মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও আসামি করা হয়েছে। সুতরাং তাকে জামিন দেওয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের দৃঢ় বিরোধিতা রয়েছে।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আবুল বারকাতের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি তিন দিনের রিমান্ড শুনানির জন্য সিএমএম আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এরপর তাকে আবার হাজতখানায় নেওয়া হয়। এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার ২৬২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করেছিলেন। আতিউর রহমান ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশলে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।