রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ নামে পরিচিত মো. সোহাগ হত্যা মামলায় নতুন করে গ্রেফতারকৃত দুইজন—মো. পারভেজ ও মো. জহিরুল ইসলামের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। এই মামলার তদন্তে দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। দুপুরে পারভেজ ও জহিরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতয়ালী থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে শুনানি শেষে আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের সময় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে বুধবার সকালে কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে এই দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
এ পর্যন্ত সোহাগ হত্যা মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন মাহমুদুল হাসান মহিন, টিটন গাজী, মো. আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, তারেক রহমান রবিন, সজীব ব্যাপারী, মো. রাজিব ব্যাপারী, নান্নু কাজী, রিজওয়ান উদ্দীন ওরফে অভিজিৎ বসু, মো. পারভেজ ও মো. জহিরুল ইসলাম। মামলার তথ্য মতে, ১৭ জুলাই লম্বা মনির, আলমগীর ও টিটন এবং ১৯ জুলাই সজীব ও ২০ জুলাই মহিন আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া রিমান্ড শেষে রাজিব কারাগারে রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে গত ৯ জুলাই, যখন ৩৯ বছর বয়সী ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ, যিনি মো. সোহাগ নামেও পরিচিত, মিটফোর্ড হাসপাতালের গেটের কাছে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তাকে কুপিয়ে, পিটিয়ে এবং পাথর দিয়ে আঘাত করে মারধর করা হয়।
নিহত সোহাগ কেরানীগঞ্জের পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে পুরান ঢাকার রানী ঘোষ লেনে ভাঙারির ব্যবসা করতেন তিনি। তার মৃত্যুতে নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া পুলিশ অস্ত্র মামলা দায়ের করেছে, যা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দিক থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। সর্বশেষ এই মামলায় গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নেওয়ার মাধ্যমে তদন্তকারী সংস্থাগুলো আশা করছে অপরাধের মূল পর্যায় ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের তথ্য বের করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে পারবে। মামলার প্রক্রিয়া অগ্রসর হওয়ায় জনগণের মাঝে একটি সঠিক ও সময়োপযোগী বিচার পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।