চাঁদপুরের কচুয়ায় শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে দু’টি ভিন্ন স্থানে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে, যা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রথম ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ফতেবাপুর গ্রামে, যেখানে দেড় বছর বয়সী ফাইজা আক্তার নামের এক শিশু পুকুরে ডুবে মারা গেছেন। ফাইজা আক্তার হলেন উপজেলার ২ নম্বর পাথৈর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. গোফরান উদ্দিনের কন্যা। জানা যায়, ওই দিন বিকেলে গোফরান উদ্দিন তার মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করানোর উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন। খেলা-ধুলার মধ্যে ফাইজা হঠাৎ নজরচাওয়ায় বাইরে গিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। মুহূর্তেই তাকে পানিতে ডুবে যেতে দেখে গোফরানসহ পরিবারের সদস্যরা চেষ্টারত হলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেননি। পরে আশেপাশের লোকজনের সহায়তায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশুটির লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সদস্যরা হারানোর যন্ত্রণায় স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন।
একই দিন আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে উপজেলার সাজিরপাড় গ্রামে, যেখানে তিন বছর বয়সী হুমাইরা আক্তার নামের এক শিশুও পুকুরে পড়ে মারা যান। হুমাইরা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. হুমায়ুন করিবের মেয়ে। খেলার সময় শিশুটি দুর্ঘটনাক্রমে পুকুরে পড়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত তার দেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দুই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ শোকাহত ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এলাকায় পানির কাছে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকেই সরকারের কাছে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া পরিবারগুলোকে মানসিক সহায়তা দেয়ার প্রয়োজনীয়তাও তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং শিশুর মৃত্যুর কারণ নিরুপণের জন্য তদন্ত শুরু করেছে। তারা এলাকায় সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপদ খেলার পরিবেশ তৈরির জন্য পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগ নিয়েছে। চাঁদপুরের কচুয়া এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে শিশুদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির কথা তুলেছে, যা স্থানীয় প্রশাসনের জন্য বড় একটি সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। জনগণ আশা করছে দ্রুত এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে আরও কোন শিশুর প্রাণহানি না ঘটে।