যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে একটি ছোট বিরোধী দল। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার নিজের অবস্থান না পরিবর্তন করেন, তবে গ্রীষ্মকালীন বিরতির পরবর্তী অধিবেশনে তারা ‘ফিলিস্তিন স্বীকৃতি বিল’ উত্থাপন করবে এবং বিষয়টি ভোটাভুটির মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা চালাবে। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাপন্থি দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) জানিয়েছে, তারা আসন্ন অধিবেশনে এই বিল আনতে যাচ্ছে। যদিও স্টারমার পূর্বে বলেছিলেন, তিনি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে রাজি, তবে তা হতে হবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি সমন্বিত শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে। এসএনপির এমন অবস্থান এসেছে এমন এক সময়, যখন যুক্তরাজ্যের ২২০ জনেরও বেশি সংসদ সদস্য-যাদের মধ্যে স্টারমারের নিজ দল লেবার পার্টির অনেকে আছেন-সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন ফ্রান্সের মতো যুক্তরাজ্যও ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
এই বিষয়ে নয়টি রাজনৈতিক দলের এমপিরা একসঙ্গে একটি যৌথ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। চিঠির ঠিক একদিন আগেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ঘোষণা দেন, আসন্ন জাতিসংঘ অধিবেশনে ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। এসএনপি নেতা স্টিফেন ফ্লিন স্পষ্ট করে বলেন, ‘স্টারমার যদি এখনো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে দেরি করেন, আমরা সেপ্টেম্বরেই "প্যালেস্টাইন রিকগনিশন বিল" উত্থাপন করব এবং পার্লামেন্টকে বাধ্য করব এটি নিয়ে ভোট দিতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আর গ্রহণযোগ্য নয় নিরপেক্ষ বা অপ্রতিষ্ঠিত অবস্থান। সময় এসেছে কিয়ার স্টারমার সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ও ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির পক্ষে অবস্থান নেন।’ উল্লেখ্য, ফ্রান্স যদি তাদের ঘোষণা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তারা হবে প্রথম জি-৭ সদস্য ও সবচেয়ে প্রভাবশালী ইউরোপীয় রাষ্ট্র যারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।
গাজায় যুদ্ধ ও মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে কিয়ার স্টারমারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ বাড়ছে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। এদিকে, শনিবার স্টারমার ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা ও আহত শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। যদিও এসএনপির পার্লামেন্টে মাত্র ৯টি আসন রয়েছে (মোট ৬৫০ আসনের মধ্যে), তবুও তাদের এই পদক্ষেপ ব্রিটিশ রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিতে পারে।