বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আপাতত রেপো সুদহার ১০ শতাংশই থাকবে। তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য প্রয়োজন মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, নীতিনির্ধারক পরামর্শক, প্রধান অর্থনীতিবিদ, গবেষণা বিভাগের পরিচালক ও ব্যাংকের মুখপাত্ররা। গভর্নর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে কিছুটা সফল হয়েছি। এখন সেটা সাড়ে ৮ শতাংশের আশপাশে। আশা করছি, তা আরও কমে ৩ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসতে পারে। তবে আমি সন্তুষ্ট হবো তখনই, যখন এটি ৩ শতাংশে পৌঁছাবে।’ তিনি আরও জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দু’টি কৌশল গ্রহণ করতে হয়-একটি সরবরাহের দিক থেকে, অন্যটি চাহিদা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমে চাহিদা নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দিয়েছে, যার কারণে সুদহার বাড়াতে হয়েছে। এতে ব্যাংক ঋণ ও তারল্য সংকুচিত হয়েছে, সরকারও বাজেট খাতে কৃচ্ছ্রতা দেখিয়েছে।
সরবরাহ ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে গভর্নর বলেন, গত বছর ডলারের সংকট থাকলেও বিদ্যুৎ, সার ও এলএনজি আমদানিতে বাধা আসতে দেওয়া হয়নি। ডলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রথমে ১২২ টাকা রেট নির্ধারণ করে পরে তা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, তখন রেট ১৬০–১৭০ টাকা হয়ে যাবে, কিন্তু তা হয়নি। সুদহার কমানোর বিষয়ে গভর্নর বলেন, যখন মূল্যস্ফীতি নীতি সুদহারের তিন শতাংশ নিচে নামবে, তখনই তা কমানোর সুযোগ তৈরি হবে। বর্তমানে রেপো রেট ১০ শতাংশ, ফলে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামলে তা পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যেই সুদহারে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহার ১২ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশে এসেছে। ওভারনাইট রেটও সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে, যাতে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে সহজে মুনাফা করতে না পারে। মুনাফা করতে হলে তাদের বিনিয়োগে যেতে হবে। গভর্নর আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন একটি সুসংহত কৌশল অনুসরণ করছে।