ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে রিট করা এক নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি অন্যের ওপর দায় চাপানোর বদলে সরাসরি দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে প্রচার কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম এ কথা বলেন। তিনি জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদে তারা প্রশাসনের কাছে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তবে বিচারের কথা বলায় অন্যরা তাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এ কারণে অপরাধীর বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সাদিক কায়েম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। তিনি আরও বলেন, শুরু থেকেই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন যদি সাইবার বুলিং প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিত, তাহলে আজকের এই ঘটনা ঘটত না। দায় চাপানোর রাজনীতির কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোমবার রিটকারী শিক্ষার্থীকে আলী হুসেন নামের এক শিক্ষার্থী গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন। ফেসবুকে দেখা গেছে, আলী হুসেন ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত। তাই মনে হচ্ছে, ছাত্রদল তাদের অপরাধ থেকে বাঁচতে অন্যের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সাইবার বুলিং করেছে, তার বিরুদ্ধে সবাইকে একমত হয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে। ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। এখন যখন তাদের প্যানেলের নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হ্যারাসমেন্ট ও সাইবার বুলিং হচ্ছে, তারা নীরব থাকছেন। আবার অপরাধীর বিচারের কথা বলায় তাদের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। এভাবে প্রকৃত অপরাধী দোষমুক্তি পাচ্ছেন। তারা চান, অপরাধীর বিচারের ব্যবস্থা হোক।
আবু সাদিক সবাইকে অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করলে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস পাবেনা। ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রথম প্রতিশ্রুতি হলো নারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা। ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে সাদিক কায়েম বলেন, তারা ৩৬ জুলাইকে ভিত্তি করে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ১২ মাসের মধ্যে এসব সংস্কার সম্পন্ন করার রোডম্যাপও তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের শিক্ষার্থীবান্ধব কাজগুলো নিয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদ্গার করা হচ্ছে। প্রচারের প্রথম দিনই তাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, নারী প্রার্থীদের ছবি বিকৃত করা হয়েছে। প্যানেলের চার নারী প্রার্থীকে ক্রমাগত সাইবার বুলিং ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।