ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে রাজধানীর ভাটারা এলাকার জামায়াত আমিরের বাসভবনে একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন ইইউ মিশনের ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন বেইবা জেরিনা। সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সমাজিক স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং গণতন্ত্রের উন্নয়নের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মাইকেল মিলার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা এবং রাজনৈতিক সংলাপের গুরুত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন। ডা. শফিকুর রহমানও জামায়াতের দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন, তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
সাক্ষাৎকালে দুই পক্ষ ভবিষ্যতে পারস্পরিক সম্পর্ক, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে তাদের প্রস্তুতি এবং আশাবাদ প্রকাশ করেন। মাইকেল মিলার জামায়াত আমিরের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং দলের কার্যক্রম ও নেতৃত্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে সমর্থনের ইঙ্গিত দেন। এছাড়া সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইইউ’র উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে জামায়াতের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনাও আলোচ্য হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির এবং সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, এছাড়াও জামায়াতের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান। আলোচনার সময় দুই পক্ষই দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে খোলামেলা ও গভীর আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে একসাথে কাজ করার ক্ষেত্রে যে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে সম্মত হন।
সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় পক্ষই এই বার্তা দেন যে, পারস্পরিক সংলাপ, সহযোগিতা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা রাজনৈতিক সহনশীলতা, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং নাগরিকদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার বিষয়েও আলোচনা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, এই সাক্ষাৎকে কেবল সৌজন্য সাক্ষাৎ হিসেবে নয়, বরং রাজনৈতিক সংলাপ ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।