বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর জামিন আবেদন আদালত নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বেরোবির উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মামলার শুনানির পর বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে, পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কলিমুল্লাহকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহজ বিন ইসলাম। নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর পক্ষে তার আইনজীবী মহসিন রেজা জামিনের আবেদন করেন, তবে দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর দেলোয়ার জাহান রুমি তা প্রতিহত করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কলিমুল্লাহকে ৭ আগস্ট মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিনই তার জামিন আবেদন খারিজ করা হয় এবং কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২৭ আগস্ট পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
গত ১৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কলিমুল্লাহসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম, হাবিবুর রহমান। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করেন। তারা মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই ৩০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের চুক্তি করেন। ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কেটে নেওয়া নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখার পাশাপাশি সেই এফডিআর ঠিকাদারকে লোন দেওয়ার জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অনুমোদন দেন, যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারী ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার আইন না থাকলেও অগ্রিম বিল প্রদান করা হয় এবং বিলের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো মুক্তি দেওয়া হয়। প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ডিজাইন না মেনে সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ার নিয়মভঙ্গ করে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া অস্বাভাবিক হারে মূল্য দাখিল বা ফ্রন্ট লোডিং থাকা সত্ত্বেও পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন না করার অভিযোগও রয়েছে।