আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও যারা সৎ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা, দুর্নীতি কিংবা সহিংসতার অভিযোগ নেই, তারা যদি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তবে তাদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে এক কর্মী সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি জানান, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে সবক’টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে যেসব আসনে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় ও শক্তিশালী ব্যক্তিত্বরা ক্লিন ইমেজ নিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেবেন, তাদেরও মনোনয়ন দেওয়া হবে। প্রার্থী সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং নির্বাচনকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে এটি দলের কৌশল হিসেবে কাজ করবে। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ কিছু এলাকায় আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সমর্থন রয়েছে। এসব জেলায় যদি সৎ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন, তাদের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে দল ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও যদি কারও বিরুদ্ধে মামলা বা সহিংসতার অভিযোগ না থাকে এবং তিনি জনপ্রিয় হন, তাহলে জাতীয় পার্টি কেন তাকে মনোনয়ন দেবে না? অবশ্যই দেবে। আমাদের প্রার্থী সংকট দূর করার পাশাপাশি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে বিএনপিকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সহিংসতামুক্ত, গণতন্ত্রপন্থী ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো উচিত তাদের। নইলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে একা হয়ে পড়বে। যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না থাকে, তাহলে ইসলামী ঐক্যজোট, জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাই পীরের দল, এনসিপি, গণধিকার পরিষদের মতো দলগুলো একপাশে থাকবে আর অন্যপাশে থাকবে শুধু বিএনপি। তখন যদি এসব দল ঘোষণা দেয় যে তারা পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না, তবে বিএনপি বিপাকে পড়বে। এর ফলে একক নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি অভিযোগ করেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিগুলো বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেখছে বিএনপি এগিয়ে রয়েছে এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারে। তাই পিআর পদ্ধতির অজুহাত তৈরি করে বিএনপিকে বিপদে ফেলতে চাইছে। এ অবস্থায় সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিএনপিরও ইতিবাচক ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে চায়। আমরা চাই নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ থাকুক, যাতে জনগণের ভোটাধিকার সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। একতরফা নির্বাচন জাতীয় স্বার্থ ও গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়। এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, মহানগর কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা কমিটির সদস্যসচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিমসহ বিপুল সংখ্যক স্থানীয় নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।