কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়লই বালাটারি গ্রামে মো. আব্দুর রশিদের বাড়িতে চার পা বিশিষ্ট এক বিরল কানিবকের দেখা মিলেছে। খবর পেয়ে এবং কৌতূহল জাগিয়ে তোলায়, ব্যতিক্রমধর্মী এই বকটি দেখতে প্রতিদিনই রশিদের বাড়িতে কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমছে। এই অনন্য ঘটনার কারণে পুরো গ্রামজুড়ে এটি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মো. আব্দুর রশিদ বালাটারি গ্রামের একজন পরিচিত বাসিন্দা। পেশায় তিনি হাঁড়িপাতিল ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাঁড়িপাতিল বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করছেন। পেশার তাগিদে তিনি ফুলবাড়ীর শহর ও গ্রামগঞ্জে প্রায়ই ছুটে বেড়ান। সম্প্রতি হাঁড়িপাতিল বিক্রি করে বাড়ি ফেরার সময় তিনি পুকুরপাড়ের রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তাঁর নজর পড়ল একটি বকের দিকে। প্রথমে সাধারণ বক ভেবেছিলেন, কিন্তু যত ঘনিষ্ঠভাবে লক্ষ্য করলেন, দেখলেন অন্য বকের তুলনায় পাখিটির পায়ের সংখ্যা অস্বাভাবিক। তিনি লক্ষ্য করলেন, এই বকের দুটি নয়, বরং চারটি পা রয়েছে। এ দৃশ্য দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। পরে কৌশলে বকটিকে ধরে নিয়ে বাড়িতে আনার সিদ্ধান্ত নেন। বাড়িতে এনে খাঁচায় বন্দি করার পর, চার পা বিশিষ্ট এই অনন্য বকটি গ্রামের মানুষের কৌতূহল ও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষজন তাকে দেখতে আসেন।
দর্শনার্থী মো. আজগর আলী বলেন, “এ বয়সে অনেক বক চোখে পড়েছে, কিন্তু চার পা বিশিষ্ট বক কখনও দেখিনি। এ দৃশ্য সত্যিই বিস্ময়কর এবং সবই আল্লাহর ইচ্ছা।” আব্দুর রশিদ বলেন, “রাস্তার পাশে বকটির চারটি পা দেখে আমি অত্যন্ত অবাক হয়ে যাই। সেই মুহূর্তে তার প্রতি মায়া অনুভব করি। কৌশলে ধরে নিয়ে বাড়িতে খাঁচায় রেখেছি, যাতে এটি নিরাপদে থাকে। প্রতিদিন মানুষের আগ্রহ এবং প্রশংসা দেখে আনন্দিত হই।” ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান কনক কালবেলাকে জানিয়েছেন, এটি মূলত একটি দেশি প্রজাপতির বক। গ্রামের মানুষজন এই বকটিকে ‘কানিবক’ নামে চেনেন। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেছেন, পাখিটি জন্মগত ত্রুটির কারণে চার পা নিয়ে জন্মেছে, যা এক বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা। উপজেলার অন্য বাসিন্দারা বলেন, “এ ধরনের বিরল ঘটনা খুব কমই ঘটে। চার পা বিশিষ্ট এই বকটি শুধু গ্রামের নয়, বরং পুরো উপজেলার জন্যই এক আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা প্রতিদিন এখানে আসেন, বকটির প্রতি তাদের কৌতূহল ও আগ্রহ প্রকাশ করেন।”
এ ঘটনার কারণে স্থানীয় গণমাধ্যমেরও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের বিরল প্রজাতির প্রাণী প্রদর্শন এবং সঠিক যত্ন নিলে এটি গবেষণা এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।