মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাছ রক্ষার অঞ্চল এবং এটি একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রামসার সাইট। তিনি জানান, হাওরে অবৈধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরা হচ্ছে, যা স্থানীয় মাছের প্রজনন ও খাদ্য চক্রের জন্য ক্ষতিকর। তিনি উল্লেখ করেন, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলে হাওর ও সংলগ্ন নদীতে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে এবং এর ফলে মাছের সংখ্যা ও প্রজনন বাড়বে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি টাঙ্গুয়ার হাওরসহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করার মতো, তবে হাওরের অনিয়ন্ত্রিত ও দায়িত্বহীন পর্যটন ব্যবস্থাপনা উদ্বেগজনক। পর্যটকেরা ঘুরতে এসে চিপস খাওয়ার পরে প্যাকেট ও প্লাস্টিক পানিতে ফেলে দিচ্ছে, যা পরিবেশ ও মাছের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি আরও জানান, হাওরে অভিযান আরও কার্যকর করার জন্য মৎস্য অফিসকে স্পিডবোট প্রদান করা হবে। মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে এবং হাওরের বিশেষ ‘জোন’ এলাকায় মাছ ধরা সবসময় নিষিদ্ধ রাখা হবে। সেক্ষেত্রে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। পরিদর্শনের সময় হাওরে অবৈধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরার দৃশ্য চোখে পড়লে উপদেষ্টা সরাসরি জেলেদের আটক করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫ জনকে আটক করে ৫ মাসের কারাদণ্ড দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরুখ আলম শান্তনু। কারাদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন- বাদাঘাট ইউনিয়নের পাতারগাঁওয়ের পাষাণ মিয়া (৩৫), আবুবক্কর (২০), আলী নুর (২২), নুর আহম্মদ (২৫) এবং সোনাপুর গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া (১৯)।
ফরিদা আখতার বলেন, হাওরে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ জাল ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অবৈধ জালের আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই মুন্সীগঞ্জের কয়েকটি কারেন্ট জালের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।