রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত দেশের শীর্ষ ইসলামী বিমা প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিরাপত্তা মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটে সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে। সূত্র জানায়, হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে কক্ষে ভাঙচুর চালানো ছাড়াও অনেক মূল্যবান ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যায়। হামলার সময় কোম্পানির সিকিউরিটি ইনচার্জসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী একযোগে অফিসে ঢুকে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল ও কটূক্তিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করেন এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করার সময় কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট (লিগ্যাল অ্যান্ড এস্টেট) মো. আজগর আলী এবং সিকিউরিটি ইনচার্জ মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ তিনজন আহত হন। হামলাকারীরা প্রায় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
ফারইস্ট লাইফের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, নজরুল-খালেক বোর্ডের সময়কালীন অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই হামলার পেছনে ইন্ধন প্রদান করেছেন। হামলার উদ্দেশ্য মূলত ছিল কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা এবং কোম্পানির সম্পদ লুট করা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, “এ ঘটনাকে সম্পূর্ণভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত বলা যাবে না। অর্থ আত্মসাতকারীদের প্ররোচনায় বহিরাগতরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। আজকের হামলাও তারই ধারাবাহিকতা।” তিনি আরও জানান, এই ধরনের হামলা কোম্পানির পরিচালনা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। হামলার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অবরুদ্ধ অফিস খুলে দেয়। এ সময় কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধীরে ধীরে স্বাভাবিকভাবে কাজে ফিরে যেতে সক্ষম হন। কোম্পানি ইতোমধ্যে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং হামলার সঙ্গে যুক্তদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।
এই হামলা দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশের জন্যও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন সহিংসতা কোম্পানি পরিচালনা ও সাধারণ নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ফারইস্টের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সিকিউরিটি ব্যবস্থা আরও কঠোর করার পরিকল্পনা করছে। ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি দেশের শীর্ষ ইসলামী বিমা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ও সেবা দেশের বহু মানুষকে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে আসছে। তবে এই হামলা কোম্পানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশে গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।